ভালোবাসার জন্য / কোন এক নদীকে

ছোট্র এক নদীর কাছে
আমি ভালবাসা চেয়েছিলাম।
নদীকে বলেছিলাম,
জীবনের না পাওয়া সীমাহীন গল্প।

নদী, আমাকে একটু ভালবাসা দেবে?
এক টুকরো লাল ফিতের মত ভালবাসা
অতি-দূর নক্ষত্র থেকে ছিটকে আসা
আমি এক উত্তপ্ত মরুভূমি।
যার ঠিকানা--চিরজ্বলন্ত মহাশ্মশান
যার অন্তর আর বাহির বড় জ্বালাময়
যার অন্তরাত্মা ছিন্ন করেও
একটু সুখ, একটু শান্তি পাওয়া যাবে না।
শতাব্দির পর শতাব্দি ধরে
আমি ক্লান্ত, নীড় হারা পাখির মত


ক্রমাগত ছুটছি, ক্রমাগত ছুটছি
কোন এক নিদ্রাহরিণীর কল্পনার ছোঁয়া পেতে
একটু ভালবাসার জন্য।

মেঘের কাছে, পাহাড়ের কাছে
শিলার কাছে, অরন্যের কাছে, ঝরণার কাছে
এমনকি ভোরের শিশিরের কাছে
আমি ভালবাসা চেয়েছি।
কেউ কথা দিলেও
শেষ কথা, কেউ রাখেনি।
তবে হ্যাঁ, শিশির ভালবাসা দিয়েছিল
সকালের এক চিলতে কিরণ
সে ভালবাসা কেড়ে নিয়ে গেছে।


আজ থেকে সাড়ে চারশ কোটি বছর আগে
আমার জন্ম; এতটা বছর
শুধু ভালোবাসার কাঙাল হয়েই
সৌরজগতের আনাচে-কানাচে ঘুরেছি
পাইনি কারো সামান্য বিশ্বাস।
সমুদ্রের ডাকে ছুটে গিয়েছি
স্রোতের আঘাত পাথরের মত সয়েছি।
আজো, মরুভূমি হয়েই আছি।
আমি জানি, আমি কারো স্পর্শ পাব
কবে পাব, জানি না ।
শতাব্দির সিঁড়ি বেয়ে বারবার জন্ম নিয়েছি আমি
এ জন্মে নদী, আমি তোমার কাছে এসেছি।

নদী আমার সমস্ত দুঃখ-যন্ত্রণা
নিরব ভাষায় বুঝেছিল--
এক ফোঁটা বিশ্বাসও দিয়েছিল
নদীর চুলের সিঁথিতে সিঁদুর দিতেই
হঠাৎ করে বলল,
‘তুমি দাঁড়াও, অপেক্ষা কর...।’
আমি দাঁড়িয়েছিলাম, অপেক্ষা করেছিলাম
পুরো এক হাজার বছর;
নদী আর ফিরেনি।

সিঁদুরে হাত, আজ রক্তের প্রবাহ বয়ে চলে...
আমার জানা ছিল না
সব নদীর একাধিক মুখ থাকে।

1 comment: